বিভেদ ও ঘৃণামুক্ত নতুন সমাজ গড়ুন ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমোনি’র আবেদন

Posted by স্বাভিমান Labels: , , , , , ,




সুধী জনসাধারণ,
আপনার পরিবারে কি কেউ অসুস্থ হয়েছে? জেনে রাখবেন, ঔষধের দাম ও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়েই বহু পরিবারের সদস্যদের পেটে গামছা বাঁধতে হচ্ছে এবং দেনার দায়ে পড়তে হচ্ছে। কারণ আমাদের দেশের সরকার স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ কমিয়ে দিয়ে ও লাগামছাড়াভাবে ঔষধের দাম বাড়তে দিয়ে ব্যক্তি মালিকদের অঢেল মুনাফার বন্দোবস্ত করে দিচ্ছে। বহুজাতিক বিদেশী কোম্পানি বিভিন্ন নামে ঔষধের বাজার দখল করে নিচ্ছে। তাতে আমাদের দেশের কোটি কোটি গরিব মানুষ চিকিৎসার সুযোগ হারাচ্ছে। আপনি কি আপনার সন্তানদের উচ্চ-শিক্ষা দিতে চান? প্রাইভেট শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো ওঁত পেতে বসে আছে অভিভাবকদের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স আগে যাচাই করে নিতে। যাদের আর্থিক সামর্থ্য আছে সেরকম লোকের সংখ্যা ৫ থেকে ১০ শতাংশ, বাকী ৯০% লোকের উচ্চ-শিক্ষার দুয়ার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষাও হচ্ছে সংকুচিত, কারণ সরকার শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ ক্রমাগত কমিয়ে চলেছে। আপনি বা আপনার সন্তানের কি রুজি-রোজগার চাই? তাহলেই হয়েছে, সরকারি চাকরি নেই, কারখানা উৎপাদন তলানিতে, কৃষি বিপর্যস্ত, এনরেগা খাতেও অর্থ বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে সরকার। ঠিকাদার কোম্পানির অধীনে সস্তা মজুরির কাজ বা কম বেতনের আই-টি চাকরির সন্ধানে হিড়িক পড়েছে, অধিকাংশেরই কাজ জুটছে না। বেকারত্ব বেড়ে চলেছে ক্রমাগত। সস্তায় মজুর পেতে ও জমির দখল নিতে শ্রম আইন ও ভূমি আইন সংশোধন করা হচ্ছে।
            আমাদের দেশ তথা গোটা বিশ্ব এক সংকটকালীন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব বাজার, বৃহৎ বহুজাতিক কোম্পানির ব্যবসায়িক ফাঁদ, তীব্র শ্রম শোষণ, লাগামছাড়া সম্পদ লুণ্ঠনের ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের বেড়াজালে প্রতিটি দেশ একে অপরের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। ভারতবর্ষও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। চরম অর্থনৈতিক সংকটে কোটি কোটি মানুষের জীবনে নেমে আসছে বিপর্যয়, বাড়ছে অসাম্য ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা। উন্নয়ন ও বিকাশ মানে বহুজাতিক কর্পোরেট লুটেরাদের মুনাফা, সাধারণ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। রাজনৈতিক নেতারা জনগণকে নাটকীয় ভঙ্গিতে গল্প শোনান যে অর্যাুকল, ওয়ালমার্ট, মসান্টো, নভার্টিস, ফেসবুকের মালিকদের মত বিদেশি ধনকুবেররা কিংবা রিলায়্যান্সের মত বৃহৎ কোম্পানিরা যত বেশি মুনাফা করবে, ততই জলের মত চুঁইয়ে চুঁইয়ে নীচের তলার সাধারণ মানুষের কাছে নাকি অর্থ আসবে। কিন্তু এই জল যে অনেক উপরেই শুকিয়ে যায়, সাধারণ মানুষের কাছে কানাকড়িও আসে না তা সবাই এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। আম-জনতার ক্রয় ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, অর্থনীতি বিপর্যস্ত এবং ফলে রাজনীতিও বিপর্যস্ত।
             এই বিপর্যস্ত রাজনীতিই ছড়ায় ধর্ম-ভাষা-বর্ণের নামে ঘৃণা, সৃষ্টি করে মানুষে মানুষে বিভেদ। এর প্রতিরোধে জনগণের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ভারতীয় সংবিধান প্রদত্ত জনগণের জন্য - জনগণের দ্বারা জনগণেরসরকারের বদলে এখন সরকার মানে ম্যাক্সিমাম গভর্ন্যান্স, মিনিমাম গভর্নমেন্ট’-এর শ্লোগানের আড়ালে কম জনকল্যাণ, বেশি শাসন। রাষ্ট্রের শাসন মানে জনগণের স্বাধীনতা হরণ করা, অন্ধ মতবাদের চোখ রাঙানো, ভিন্ন মত ভিন্ন আচার ভিন্ন সংস্কৃতি সহ সব ধরনের বিবিধতার গলা টিপে ধরা। এরকম প্রাণহীন, সন্ত্রস্ত ও পঙ্গু সমাজ আমরা চাই না, আমরা চাই না গোটা সমাজের উপর মুষ্টিমেয় কিছু লোকের শাসন-শোষণ।
জার্মানিতে হিটলার যা করেছেন বা রাশিয়াতে স্তালিন, আমরা এধরনের কোনো সমাজ চাই না। মতান্ধ হুকুমবাদ তথা কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সময় থাকতেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
             আসুন, সাম্প্রদায়িকতা, বর্ণবাদ, কর্তৃত্ববাদ ও লাগামছাড়া বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে ও সবার জন্য শিক্ষা-স্বাস্থ্য-রোজগারের লক্ষ্যে এক নতুন সমাজ তথা রাষ্ট্র গড়ার শপথ নিতে ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমোনিতে শামিল হই।
ফোরামের প্রচার সেল-এর পক্ষে কৃশানু ভট্টাচার্য, সেখাওত মজুমদার ও বিশ্বজিৎ দাশ কর্তৃক প্রচারিত ও শিলচর সানগ্রাফিকস থেকে মুদ্রিত

0 comments:

স্বাভিমান:SWABHIMAN Headline Animator

^ Back to Top-উপরে ফিরে আসুন